রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক কেন্দ্র চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকায় খোলা ডাস্টবিনে দিনের পর দিন অবাধে বর্জ্য ফেলায় উৎকট দুর্গন্ধে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বছরের পর বছর ড্রেনেজের পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা না থাকায় জমে থাকা পানিতে লিচুবাগানের ব্যবসায়ী ও বসবাসকারীরা অবাধে বর্জ্য ফেলানোর কারণে জনসাধারণ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকরী ভূমিকা না থাকায় এখানকার শত শত দোকানদার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ পথচারীরা ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা দায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ৩ স্কুলের শত শত শিক্ষার্থীরা ডাস্টবিনের উৎকট দুর্গন্ধ উপেক্ষা করে চলাচল করতে হয়। অধিকাংশ পথচারীরা এই দুর্গন্ধের হাত থেকে রক্ষার পেথে সামান্য পথও অন্য দুরের পথ দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। অতিসত্বর পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পরিবেশ দূষনরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, লিচুবাগান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের ড্রেনেজের সুব্যবস্থা না থাকায় ড্রেনেজের পানি বছরের পর বছর জমে থাকার পর এলাকার পরিবেশ দুর্গন্ধে বিষিয়ে উঠে। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ করার কারনে ড্রেনের পানি কর্ণফুলি নদীতে না যাওয়ায় পানিগুলো বাজারের গলিতে ঢুকে রাস্তার জমে থাকা পানি অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বর্ষাকালে দোকান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক পরিবারগুলোর মলমুত্র ড্রেনে ভাসতে থাকে। এসময় পানিতে তলিয়ে যায় চলাচলের রাস্তাসহ লিচুবাগানের নিচু এলাকা। এতে দুর্গন্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় জনসাধারণের চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে লিচুবাগানের ব্যবসায়ী সমিতির নির্ধারিত ডাস্টবিনের অধিকাংশ বর্জ্য ড্রেনে ফেলার কারণে ড্রেনেজ ভরাট হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানের আইডিয়াল কেজি স্কুল, রাইজিং সান কে.জি এন্ড হাইস্কুল ও নবনির্মিত দ্যা রাইজিং সান কেজি এন্ড হাই স্কুলের নতুন বছরের শিক্ষার্থীদের এসব ড্রেনেজ ও খোলা ডাস্টবিন উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ে যেতে হবে। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। যা তাদের মানসিক বিকাশে বাঁধার সম্মুখীন হবে বলে জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
রাইজিং সান কেজি এন্ড হাই স্কুলের অধ্যক্ষ সুলতানা রাজিয়া জানান, ডাস্টবিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকা, ত্রুটিপূর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ড্রেনেজে অবাধে বর্জ্য নিক্ষেপ করার কারণে এই এলাকার সম্পূর্ণ পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে।ড্রেনেজ ও ডাস্টবিনের বর্জ্যে দুর্গন্ধে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মারাত্বক অস্বস্থিকর পরিবেশে বিদ্যালয়ে আসছে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
লিচুবাগানের বাসিন্দা মাহবুুবুল আলম সওদাগর জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সরাসরি কর্ণফুলি নদীতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পানি সরাসরি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা নিলে এবং যত্রতত্র বর্জ্য ফেলানো বন্ধে এলাকার মানুষ সচেতন হলে এথেকে পরিত্রাণ পাবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য ব্যবসায়ী সমিতি, লিচুবাগানের দোকানদার, বসবাসকারীরা এবং এলাকার স্থানীয় প্রশাসন মিলে উদ্যোগ নিলে লিচুবাগানের জনসাধারণ উৎকট দুর্গন্ধ ও নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
লিচু বাগান ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. লোকমান তালুকদার জানান, ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বাজারে বর্জ্য ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ডাস্টবিনে ময়লা আবর্জনা না ফেলে সরাসরি ড্রেনে নিক্ষেপ করে। তাই ড্রেন ভরাট হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর জানান, লিচুবাগান বাণিজ্যিক কেন্দ্র নিচু স্থান হওয়ায় উপর থেকে পানি গড়িয়ে এসে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। পানি নিষ্কাষনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসে বাধ্য হয়। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করার জন্য আমি অনেকবার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। সম্পূর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে ব্যবসায়ী ও বসবাসকারীদের এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি জানান।